বিশেষ সংবাদদাতা | মাশরাফি বিন মর্তুজা, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ-বাংলাদেশের ক্রিকেটের ৫ রত্ন। সবচেয়ে বড় তারকা, পারফরমার হিসেবেও অনন্য।
প্রাপ্তি, অর্জন আর কৃতিত্বকে মানদণ্ড ধরলে ওই ৫ জনের ধারে কাছে নেই অন্য কেউ। তাই ভক্ত, সমর্থক ও মিডিয়া এক যুগ আগেই তাদের নামকরণ করেছে ‘পঞ্চপাণ্ডব’।
ইতিহাস জানাচ্ছে, ২০০১ সাল থেকেই একজন একজন করে (প্রথমে মাশরাফি) পঞ্চপাণ্ডবের জাতীয় দলে অভিষেক। তারপর ২০০৫ সালের মে মাসে ইংল্যান্ডের মাটিতে ক্রিকেট তীর্থ লর্ডসে মুশফিক, ২০০৭ সালের মে মাসে চট্টগ্রামে ভারতের বিপক্ষে সাকিব, ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে ডানেডিনে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে তামিম ইকবাল ও ২০০৯ সালের জুলাইতে কিংসটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের।
তার পর থেকে গত ১৮ বছরে ওই ৫ শীর্ষ তারকার অন্তত একজন সবসময়ই বাংলাদেশের টেস্ট দলের সঙ্গে ছিলেন এবং খেলেছেন। যদিও সময়ের প্রবাহতায় প্রথমে মাশরাফি ইনজুরির কারণে ২০০৯ সালের জুলাই মাসে কিংসটাউনে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে বাধ্য হন।
তারপর মাহমুদউল্লাহ ২০২১ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ও তামিম ইকবাল ২০২৩ সালের এপ্রিলে আয়ারল্যান্ডের সাথে শেরে বাংলায় শেষ টেস্ট খেলতে নেমেছেন।
কিন্তু সাকিব আর মুশফিকের একজন ঠিকই দেশের হয়ে টেস্ট খেলছেন। অবশেষে এবার নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে যে দলটি টেস্ট সিরিজ খেলতে অ্যান্টিগা গেছে, সেই দলে সাকিব আর মুশফিকের কেউ নেই। মানে ১৮ বছর পর বাংলাদেশ এবারই প্রথম কোনো টেস্ট খেলতে নামছে, যে দলে পঞ্চপাণ্ডবের কেউ নেই।
ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলেই বিদায় নিতে চেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু নিরাপত্তাজনিত সমস্যার কারণে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে আর খেলা হয়নি তার। তবে গত মাসে ঢাকার শেরে বাংলায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সবশেষ টেস্ট সিরিজেও দলে ছিলেন মুশফিকুর রহিম, খেলেছেনও। কিন্তু এবার ইনজুরি কারণে তিনিও নেই।
এই যে ৫ শীর্ষ তারকা ছাড়া প্রথম টেস্ট সিরিজ, তাতে কেমন করবে টাইগাররা? পঞ্চপাণ্ডবের বিকল্প আছে কি? কবে নাগাদ আর একজন তামিম-সাকিব বা মুশফিক আসবে? এ কৌতুহলী প্রশ্ন সবার।
জাতীয় দলের অন্যতম নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক মনে করেন, এত দীর্ঘ সময় জাতীয় দলের হয়ে খেলা সাকিব-মুশফিকদের বিকল্প রাতারাতি পাওয়া সম্ভব না। তবে রাজ্জাক আশাবাদী।
বুধবার গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে রাজ্জাক বলেন, ‘যদি কোনো ক্রিকেটার ১৫-২০ বছর ক্রিকেট খেলে চলে যায়, তখন সঙ্গে সঙ্গে ওই ক্রিকেটারের বদলি পাওয়া একটু মুশকিল। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে আমি তাই মনে করি। তারপরও আমাদের দেশে যারা তরুণ ক্রিকেটার আছে, আমি খুব আশাবাদী তাদের নিয়ে। এখান থেকে গেলে তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নিয়ে চিন্তা করতে হবে। ওই লেভেলটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে আর একটু সময় লাগবে ওদের।’