জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | আওয়ামীঘেষা অধ্যাপক প্রফেসর ড হারুনুর রশিদ খানের বিরুদ্ধে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন ছাত্র-জনতার লাগাতার আন্দোলন ও ত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ ১৬ বছরের দুঃশাসন থেকে মুক্ত। এই দুঃশাসনের সহযোগী হওয়ার দায় মাথায় নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও পদত্যাগ করেছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক ও ছাত্রসমাজের আশা যে শিক্ষানুরাগী ও ছাত্রদের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ কেউ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বায়িত্ব নিবেন। কিন্তু অতীব দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে একটি কুচক্রী মহল, যারা আগের আওয়ামী শাসনের সাথে যুক্ত ছিল, তারা নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এই মহলের হোতা হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড হারুনুর রশিদ খানের নাম আমরা জানতে পেরেছি। ড হারুনুর রশিদ খানকে সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী শাসনের দোসর ও জাতীয়তাবাদী আদর্শের বিরুদ্ধে লেগে থাকা একজন বলেই জানে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগেরও অন্ত নেই। যেমনঃ
১। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী শাসন-বিরোধী যেকোনো আন্দোলনেই তিনি ছিলেন অনুপস্থিত। ছাত্র-ছাত্রীরাও তাঁর সম্পর্কে ভাল ধারনা পোষণ করে না। তাঁর বিরুদ্ধে তহবিল তছরুপ ও টাকার বিনিময়ে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ প্রচুর। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সবাই তাঁর এসব অনিয়মের খবর জানে।
২। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি পূর্বত্মন উপাচার্য প্রফেসর ড ফায়েক-উজ্জ-জামানের সাথে তাঁর অতিরিক্ত খাতির ছিল চোখে পড়ার মত। অনৈতিক সুবিধাও তিনি নিয়েছেন।তাঁর লিয়েন শেষ হওয়ার পরে উনি বিনা বেতনে ছুটি নিয়ে অন্যত্র চাকুরী করেন যা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বিনা বেতনে ছুটি বা অর্জিত ছুটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে চাকুরী করা যায় না। আওয়ামী আমলে আওয়ামীঘেষা লোকজনই শুধু এরকম অনৈতিক সুবিধা পেয়েছেন। সদ্য পদত্যাগী উপাচার্যের সাথে পদত্যাগের আগের দিনও ড হারুনুর রশিদ খানকে নিয়ে গোপন মিটিং এর কথাও সবাই জানে।
২। প্রফেসর ড হারুনুর রশিদ খান একজন চরমমাত্রায় সুবিধাবাদী ও অনৈতিক চরিত্রের অধিকারী। ২০০২-০৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় তিনি বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের সচিব ছিলেন। সেই একই বছরে তাঁর ছোট ভাই বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের ইলেট্রনিক্স ও কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হয়। তাঁর ভাই যেহেতু পরীক্ষার্থী, সেহেতু নৈতিকভাবে তিনি সাচিবিক দ্বায়িত্ব পালন করতে পারেন না। আরও উল্লেখ্য যে তাঁর ভাই উক্ত বিভাগের শিক্ষকদের সাহায্য নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করে। ড হারুনুর রশিদ খানের প্ররোচনায় বিভাগের কিছু শিক্ষক বাড়তি নম্বর দেয় এবং কিছু ক্ষেত্রে সেটা ধরাও পরে।
৩। একাডেমিক চর্চায় অন্যের বুদ্ধিবৃত্তিক কাজকে নিজের বলে চালিয়ে দেওয়া একটি গর্হিত ও চাকুরী যাওয়ার মত অপরাধ। ড হারুনুর রশিদ খান অন্যের একাডেমিক কাজকে নিজের নামে জার্নালে প্রকাশ করেছেন। তাঁর এ বিষয়ে সব আওয়ামীপন্থি উপাচার্যরাই নীরব থেকেছেন। এ থেকেও তাঁর আওয়ামীঘেঁষা শিক্ষকদের সাথে ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ পাওয়া যায়।
৪। ড হারুনুর রশিদ খানের চারিত্রিক স্থলনের কথা সবাই জানে। তাঁর ডিসিপ্লিনের প্রথম বাচের এক ছাত্রীর সাথে বিবাহবহির্ভুত অনৈতিক সম্পর্ক আছে। ফারহানা সুলতানা রিয়া নামের ওই ছাত্রী বর্তমানে খুলনা জেলা স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত ও এখনও অবিবাহিত। ড হারুনুর রশিদ খান সৌদি আরব অবস্থানকালে ওই শিক্ষিকাও ওখানে ছিলেন।
এরকম আওয়ামীঘেষা অনৈতিক সুবিধা গ্রহণকারী, চারিত্রিক স্থলনের অধিকারী একজন ব্যক্তি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো দ্বায়িত্বে আসা বর্তমান ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রাপ্ত স্বাধীনতা ও নতুন বাংলাদেশ গড়ায় অন্তরায় হিসেবে কাজ করবে। তাকে দ্বায়িত্ব প্রদান করা হবে এই আন্দোলনে শহীদের দূর্ণিতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, নীতিবোধসম্পন্ন ছাত্রসমাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার স্বপ্নের সাথে সাংঘর্ষিক।
অতএব, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষক ও ছাত্রসমাজ ড হারুনুর রশিদ খানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন প্রকার দ্বায়িত্বে দেখতে চায় না।