লাইফস্টাইল ডেস্ক | মিষ্টি কুমড়ার খেয়ে এর বীজ ফেলে দেন অনেকেই। তবে এই বীজ কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তাই ফেলে না দিয়ে এই বীঝ সংরক্ষণ করুন। কারণে এতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও জিংক। যা অস্টিওপোরোসিসের মতো হাড়ের সমস্যা প্রতিরোধ করে।
কুমড়ার বীজ ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম এক উৎস। তাই এটি ফেলে দেওয়ার আগে দু’বার ভাবুন। শুধু স্বাস্থ্য ভালো রাখতেই নয় বরং রূপচর্চাতেও ব্যবহার করতে পারেন কুমড়ার বীজ। এবার জেনে নিন কুমড়ার বীজ খেলে শরীরে কী ঘটে?
হাড়ের সমস্যা সারে :
কুমড়ার বীজে থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও জিংক। যা অস্টিওপোরোসিসের মতো হাড়ের সমস্যা দূর করে।
হজমশক্তি বাড়ায় :
উচ্চ ফাইবারযুক্ত এই বীজ হজমশক্তি বাড়ায়। ফলে যারা পাকস্থলীর নানা সমস্যায় ভোগেন তাদের জন্য কুমড়ার বীজ হতে পারে সেরা এক দাওয়াই। এর ফলে ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় :
কুমড়ার বীজে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইটোকেমিক্যাল। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এই করোনাকালে খাদ্যতালিকায় নিয়মিত রাখতে পারেন কুমড়ার বীজ।
রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় :
টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগী এখন প্রায় ঘরেই আছেন। এমন রোগীরা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে খেতে পারেন কুমড়ার বীজ। এতে থাকা নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান। যা শরীরের জন্য অনেক উপকারী।
অবসাদ কাটায় :
কুমড়ার বীজে আরও থাকে ট্রিপ্টোফ্যান নামের অ্যামাইনো অ্যাসিড। যা মেলাটোনিন আর সেরোটোনিন নিঃসরণ বাড়ায়। এসব হরমোন অবসাদ কাটিয়ে শরীর ও মন তরতাজা করে তুলতে সাহায্য করে। শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি করতেও এটি দারুণ উপকারী।
চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে :
কুমড়ার বীজে আছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, সালফার, জিংক, ভিটামিন এ, বি ও কে। যা চুল উজ্জ্বল ও ঘন করে তুলতে সাহায্য করে। এতে থাকা কিউকারবিটিন নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড চুল লম্বা করতে সাহায্য করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় যারা ভুগছেন, খাদ্যতালিকায় তারাও রাখতে পারেন এই বীজ। এতে নিয়ন্ত্রণে থাকবে রক্তচাপ। সঙ্গে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমবে।
অনিদ্রার সমস্যা দূর করে :
কুমড়ার বীজে আরও আছে সেরোটোনিন নামক উপাদান। যা স্নায়ুতন্ত্রের চাপ কমিয়ে অনিদ্রার সমস্যা কাটায়।
ত্বকের আর্দ্রতা ও উজ্জ্বলতা বাড়ায় :
যাদের ত্বক অত্যন্ত শুষ্ক ও সংবেদনশীল তারা নিয়মিত খেতে পারেন কুমড়ার বীজ। এতে ত্বকের আর্দ্রতা ও উজ্জ্বলতা দুটোই বাড়বে।
চাইলে এই বীজ বেটে রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়াও আস্ত বীজ সামান্য ভেজে সালাদ কিংবা স্যুপেও ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে বাদামের সঙ্গেও কয়েকটি বীজ মিশিয়ে খেতে পারেন। আস্ত চিবিয়ে খেলেই বেশি উপকার মিলবে।
প্রক্রিয়াজাত সংরক্ষণ ও স্বাভাবিকভাবে সংরক্ষণের মাধ্যমে পুষ্টিমান অক্ষুণ্ন রেখে মিষ্টি কুমড়ার বীজ সংরক্ষণ করতে পারেন। তবে আমাদের দেশে স্বাভাবিকভাবে সংরক্ষণ করাই উত্তম। স্বাভাবিকভাবে বীজ সংরক্ষণ করতে হলে কুমড়া থেকে বীজগুলো আলাদা করে তোয়ালে দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। যাতে বীজের গায়ে কিছু লেগে না থাকে। তারপর বীজগুলো পলিথিন কাগজের উপর ছড়িয়ে রাখতে হবে।
শুকানো বীজগুলো অল্প তাপে চুলায় বা ওভেনে ৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ১৫-২০ মিনিট ভাজতে হবে। ভাজা বীজগুলো বায়ুরুদ্ধ টিন, প্লাস্টিক অথবা কাঁচের পাত্রে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। পলিথিন প্যাকেটেও সংরক্ষণ করতে পারেন। এভাবে পুষ্টিগুণ ঠিক রেখে সারা বছর বীজ ব্যবহারের উদ্দেশে রাখা যায়।