জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বেশকিছু দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে এ চুক্তির প্রাথমিক পর্যায়ে সম্ভব্যতা সমীক্ষা ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে উভয় দেশ। এবার মূল পর্ব অর্থাৎ দুই দেশ নেগোসিয়েশন অর্থাৎ দর কষাকষির কার্যক্রম শুরু করেছে।
আজ রোববার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক এ কার্যক্রমের যৌথ ঘোষণা দেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রদূত ডেরেক লো। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার পররাষ্ট্র বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, সফররত সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধিদল ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নেগোসিয়েশন শেষ করে দুই দেশের মধ্যে এফটিএ স্বাক্ষর হবে। এ কার্যক্রম শেষ করতে কত দিন সময় লাগবে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কতদিন সময় লাগবে সুনিদির্ষ্ট করে বলা যাচ্ছ না। কারণ এ সঙ্গে নানা বিষয় অন্তর্ভুক্ত। তবে আশা করা যায় খুব লম্বা সময় প্রয়োজন হবে না।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। এ অর্জন বিশ্বে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি সৃষ্টি এবং বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টির পাশাপাশি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি করবে। যার মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে পণ্য রপ্তানিকালে শুল্কমুক্ত কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা হারানো অন্যতম। এর ফলে, বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যকে ঐ সব দেশের বাজারে প্রবেশের সময় সাধারণভাবে আরোপিত শুল্কের সম্মুখীন হতে হবে। ফলে, ওইসব দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংকোচনের সম্ভাবনা রয়েছে।
এলডিসি উত্তরণ পরবর্তী সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশ ও ট্রেড ব্লকের সাথে আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ অন্যতম। সিঙ্গাপুর বিশ্বের বত্রিশতম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ এবং এটি বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশিদার। সিঙ্গাপুর বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র। সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য একটি বাণিজ্য সম্ভাবনাময় এলাকা। পণ্য ছাড়াও সেবা ও বিনিয়োগ খাতেও সিঙ্গাপুরের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে দুই দেশের মধ্যে এফটিএ স্বাক্ষরের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে সিঙ্গাপুর ও বাংলাদেশ নিজ নিজ পক্ষে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা পরিচালনা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ উভয় দেশের মধ্যে নেগোসিয়েশন প্রক্রিয়া শুরু হলো।